ছোঁয়াচে করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই। এটি একজনের থেকে আরেকজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে অনায়াসেই। তাই ভাইরাস থেকে বাঁচতে মানুষ আজ গৃহবন্দি। এখন প্রশ্ন হলো, জামা-কাপড় থেকে কী ছড়াতে পারে করোনাভাইরাস? জামা-কাপড়ে কতক্ষণ বেঁচে থাকে এই ভাইরাস?



চিকিৎসকদের মতে, শুধু দু’টি হাত বারবার ভালোভাবে ধুয়ে নিলেই হবে না। যতটা সম্ভব নিজেদের পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন। গবেষণায় দেখা গেছে, প্লাস্টিক এবং ধাতব বস্তুর উপর করোনাভাইরাস তিনদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। এই বস্তুগুলোর উপরিভাগ ছিদ্রহীন হওয়ায় ভাইরাস দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হতে পারে। কিন্তু তাই বলে যে জামা-কাপড়ে যে এই ভাইরাস বেঁচে থাকতে পারে না তা কিন্তু নয়।



জামা-কাপড়েও ঘণ্টাখানেক বেঁচে থাকতে পারে এই মরণ ভাইরাস। গবেষণায় দেখা গেছে, জামা-কাপড়ের ছিদ্রে এই ভাইরাসটি আটকে যায় এবং সংক্রমিত হতে পারে না। মানে আপনার জামা-কাপড় যে সম্পূর্ণ নিরাপদ তা কিন্তু নয়।



কিছু সময়ের মধ্যে যদি ভুলেও কেউ হাত নাকে, মুখে বা চোখের মধ্যে দেয় তাহলে সেখান থেকে শরীরে প্রবেশ করবে এই ভাইরাস।



তাই ব্যবহার করা সব জামা-কাপড় ভালোভাবে সাবান দিয়ে কেচে নিতে হবে। বাইরে থকে এসে সেই জামা-কাপড় বদলে ফেলতে হবে। ব্যবহৃত জামা-কাপড় নিয়মিত হালকা গরম পানিতে সাবান গুলিয়ে ধুয়ে ফেললে সব থেকে ভালো। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা দূর হয়ে যায়।



বাড়িতে থাকলেও দিনে অন্তত দু’বার জামা-কাপড় বদলানো উচিত। ব্যবহৃত পোশাকে সবসময়ই নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস এসে জমে। এর ফলে বেড়ে যায় সংক্রমণের আশঙ্কা।



করো’নায় পু'রুষরা কেন বেশি আ’ক্রান্ত হচ্ছেন?
বিশ্বেজুড়ে করো’নাভাই’রাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে দেখা যাচ্ছে, নারীদের তুলনায় পু'রুষরা এ রোগে বেশি আ’ক্রান্ত হচ্ছেন। তবে পু'রুষদের এই রোগে আ’ক্রান্ত হওয়ার কারণ নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। এর প্রধান কারণ হিসেবে চিকিৎসক সুব্রত কুন্ডু মনে করেন, পু'রুষরা অনেক বেশি বাইরের কাজ করেন।



তিনি বলেন, ‘আসলে পু'রুষরা নারীদের চেয়ে অনেক বেশি বাইরে বের হন। তাই তারা বেশি করে আ’ক্রান্ত হয়েছেন। যেহেতু তারা বাইরে বের হচ্ছেন, তাই তারা করো’নায় আ’ক্রান্তদের সংস্প’র্শে আসছেন। সেখান থেকে আ’ক্রান্ত হচ্ছেন। ডাক্তার সাত্যকি হালদার এ বিষয়ে ডয়েচে ভেলেকে বলেছেন, ‘বিশ্বের অন্য জায়গাতেও একই ধরনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।



করো’না হচ্ছে সামাজিক অ’সুখ। ভাই’রাসটি সংক্রমক, অর্থাৎ ছোঁয়াচে। তাই যিনি বাইরে যাচ্ছেন ও আ’ক্রান্ত হচ্ছেন, তিনিই আ’ক্রান্ত হচ্ছেন। পু'রুষরা বাইরে যাওয়ায় বেশি আ’ক্রান্ত হচ্ছেন।



তিনি আরও বলেন, যে কোনো ভাইরসের একটি জেনেটিক কাঠামো থাকে। করো’নার ক্ষেত্রে সেই গঠন এখনও বোঝা যায়নি। পু'রুষ ও নারীদের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কারও বেশি কারও কম। করো’না কী’ করে এই প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাঙছে, তা এখনও জানা যায়নি। জানা গেলে বোঝা যাবে কেন পু'রুষরা বেশি আ’ক্রান্ত হচ্ছেন।



আইসিএমআরের সমীক্ষায় বলা হয়েছে, করো’নায় আ’ক্রান্ত অধিকাংশ লোকের বয়স ৪০ বছরের বেশি। সমীক্ষা অনুসারে ৫০ বছরের বেশি বয়স্করা তুলনায় অনেক বেশি আ’ক্রান্ত হচ্ছেন।



আইসিএমআরের মতে, মধ্যরেখা হলো ৫৪ বছর। এর কারণ নিয়ে অবশ্য চিকিৎসকরা একমত। তাদের মতে, ৫০ বছরের পর থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। তাই সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হয়।



সাত্যকি হালদার মনে করেন, ৫০ বছর বয়সীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমলেও ৬০-৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত বাইরে বেরোনোর প্রবণতা আগের মতোই থাকে। তাই তারা আ’ক্রান্ত হচ্ছেন বেশি।