অল্প কিছু ত্রাণ চোর ধরা পড়েছে, সবাই ধরা পড়বে, এদের কোনো ক্ষমা নেই: প্রধানমন্ত্রী মানুষকে দেওয়া ত্রাণ কেউ চু’রি করলে তাদের ক’ঠোর শা’স্তির মুখোমুখি করার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এটা (ত্রাণ চু’রি) খুবই ঘৃণ্য কাজ। এটা কোনোভাবেই ক্ষমার যোগ্য নয় এবং এটা আমরা ক্ষমা করবো না।



আজ রোববার (১২ এপ্রিল) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ক’রোনা ভাই’রাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি নিয়ে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের জে’লাগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ হুঁ’শিয়ারি উচ্চারণ করেন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি ত্রাণ চু’রি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী



শেখ হাসিনা বলেন, এটা (ত্রাণ চু’রি) ক্ষমার যোগ্য নয় এবং এটা আমরা ক্ষমা করবো না। আমি অত্যন্ত দুঃখিত কয়েকটা খবর এই ধরনের বেরিয়েছে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বা দুর্গত মানুষকে দেওয়ার জন্য যে খাদ্য শস্য দেওয়া হয়েছে, চাল দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে যারা দু’র্নীতি করার চেষ্টা করেছেন এবং কিছু ধরা পড়েছে,



আশা করি, যারাই এ রকম করবে সবাই ধরা পড়বে। তাদের কিন্তু কোনো ক্ষমা নেই। যদি প্রয়োজন হয় সেখানে ভ্রাম্যমাণ আ’দালত বসিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের শা’স্তি দেওয়া হবে। বিচার পরে দেখা যাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকের নিজের



একটা আন্তরিকতা থাকতে হবে। বিশেষ করে আমরা যারা রাজনীতি করি আমাদের আরও বেশি দায়িত্ববোধ থাকতে হবে। যারা স’রকারি বেতন পাচ্ছেন, জনগণের ট্যাক্সের টাকায়। কাজেই



প্রত্যেকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। যাদের আমরা দায়িত্ব দিয়েছি তারা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু তার মধ্যে এই সামান্য দুই একটা ঘটনা আমাদের অত্যন্ত ক’ষ্ট দেয়। এটা খুবই ঘৃণ্য কাজ। কেউ এটা করবেন না।



মঈনকে ‘বীরযোদ্ধা’ বলে মাশরাফির আবেগভরা স্ট্যাটাস



সুনামগঞ্জের ‘গরিবের ডাক্তার’ খ্যাত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া ডা. মঈন উদ্দিনের (৪৭) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ছাতক উপজেলার খুরমা উত্তর ইউনিয়নের নাদামপুর নিজ বাড়িতে পিতা-মাতার কবরের পাশেই তাকে সমাহিত করা হয়।



মঈনের মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন সদ্য বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেটদলের অধিনায়কের পদ থেকে অবসর নেয়া ক্রিকেটার ও নড়াইল ২ আসনের সম্মানিত সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টা ১৫ মিনিটে ফেসবুকে নিজের ভেরিফাইড একাউন্ট থেকে ডা. মঈন উদ্দিনের উদ্দেশ্যে দেয়া মাশরাফির স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-



‘সবাইকে শোকে ভাসিয়ে চলে গেলেন এক মহৎ প্রাণ ডাক্তার! করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গতকাল সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক মানবিক ডাঃ মোঃ মঈন উদ্দিন চলে গেলেন না ফেরার দেশে! তিনি ছিলেন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ফ্রন্ট লাইনের যোদ্ধা।



তাঁর এই মৃত্যু হৃদয় বিদীর্ণ করার মত। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের ছোবলে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশও আক্রান্ত। দেশের এই মহাক্রান্তিকালে ডা. মঈন উদ্দিন ছিলেন দেশের মানুষের জন্য আত্মোৎসর্গীকৃত। মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত একজন মানবসেবী হিসেবে মানুষের সেবা করে গেছেন তিনি।
নিজের জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে তিনি চিকিৎসাসেবা দিয়ে গেছেন। মানুষের প্রতি, দেশের প্রতি তার এই আত্মত্যাগ শব্দ-বাক্যে প্রকাশের মত নয়। মানবতার জয়গান গাওয়া ক্রান্তিকালের এই যোদ্ধাকে নিশ্চয় গোটা জাতি আজীবন পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। সবশেষে আমি এই বীরযোদ্ধাকে জানাচ্ছি- “স্যালুট”।’



করোনার মধ্যেই দরবেশের হাটে ভয়াবহ আগুন, কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি



করোনাভাইরাসের কারণে শুধু শহরাঞ্চল নয়, লকডাউন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলও। গ্রামের সাধারণ মানুষও ঘরে অবস্থান করছেন। ফলে, বন্ধ রয়েছে গ্রামীণ হাট-বাজারও। কিন্তু, এরই মধ্যে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেলো ফেনী জেলার, দাগনভূঁইয়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের একটি বাজারের ২০ থেকে ২২টি দোকান।



করোনার কারণে বন্ধ থাকায় মানুষের উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে, যে কারণে আগুণের ব্যাপ্তি ছিল বেশি। খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে এবং পাঁচটি মার্কেট সম্পূর্ণ ভস্মিভূত করে দেয়।



দাগনভূঁইয়া উপজেলার ১ নং সিন্দুরপুর ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় বাজার হচ্ছে দরবেশের হাট। এই হাটেরই উত্তর বাজার নামক এলাকায় তিনটি মার্কেটে একসঙ্গে আগুন লাগে। রহমানিয়া, রুহামা, মোহনের মার্কেটসহ ৫টি মার্কেটে মোট ২২টি দোকান আগুনে পুড়ে যায় বলে সূত্র জানায়।



স্থানীয় সাংবাদিক কাজী হাবিবুল্লাহ সুমন জানান, ‘বিকাল ৩টার দিকে আগুনের সূত্রপাত। তবে কিভাবে আগুন লেগেছে, কারণ জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে। দোকান-পাট বন্ধ থাকার কারণে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং অন্তত ২২টি দোকান পুরোপুরি ভস্মিভূত হয়ে গেছে। দোকান মালিকপক্ষ বলছে, কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে তাদের। খবর পেয়ে এলাকাবাসী দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এরপর ফায়ার সার্ভিস যোগ দেয় আগুন নেভানোর কাছে। দীর্ঘ চেষ্টার পর অবশেষে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।’



খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ১ নং সিন্দুরপুর ইউনিয়নের চেয়ারমান নুর নবী, উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, ইউএনও এবং দাগনভূঁইয়া থানার ওসি।



১ নং সিন্দুরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর নবী বলেন, ‘দরবেশের হাতের উত্তর বাজারে অন্তত ৫টি মার্কেট পুরোপুরি পুড়ে গেছে। প্রায় ২০ থেকে ২২ দোকান একেবারে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এগুলোর মধ্যে ছিল কাপড়ের, জুয়েলারি, মেডিসিন, লেপ-তোষক, ইলেক্ট্রনিক্স, কসমেটিক্স এবং বড় মুদি দোকান। খবর পেয়ে আমি নিজে ছুটে গেছি সেখানে। উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, ওসি এসেছেন। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ ৫ কোটি টাকার মত হবে।’



অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য প্রাথমিকভাবে কিছু ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল ক্ষতিগ্রস্থদেরকে জন্য ত্রাণ ও আর্থিক সহযোগিতা করা হবে। কারণ এসব দোকান ছিল তাদের একমাত্র আয়ের উৎস। এখন এভাবে আগুনে সব শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা নিঃস্ব হয়ে গেছে। সাময়িকভাবে তারা যেন চলতে পারে, সে জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে কিছু ত্রাণের ব্যবস্থা করা যায়। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও আমরা সহযোগিতা করে যাবো তাদেরকে।’