প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের এই মহামারি সহসা দূর হবে না। কিন্তু জীবন তো থেমে থাকবে না। যত দিন না কোনো প্রতিষেধক টীকা আবিষ্কার হচ্ছে, তত দিন করোনাভাইরাসকে সঙ্গী করেই হয়তো আমাদের বাঁচতে হবে। জীবন-জীবিকার স্বার্থে চালু করতে হবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।’



সরকারপ্রধান আরো বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় সব দেশই ইতিমধ্যে লকডাইন শিথিল করতে বাধ্য হয়েছে। কারণ অনির্দিষ্টকালের জন্য মানুষের আয়-রোজগারের পথ বন্ধ করে রাখা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে তো নয়ই।’



আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান। এ সময় তিনি সবাইকে ঘরে বসে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করার অনুরোধ জানান।



শেখ হাসিনা বলেন, ‘রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য বিশেষ তহবিল বাবদ পাঁচ হাজার কোটি টাকার ঋণ সুবিধা কার্যকর করা হয়েছে। যাঁরা কাজে যোগ দিতে পারেননি, তাঁরাও শতকরা ৬০ ভাগ বেতন পাচ্ছেন। ইতোমধ্যে এ প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে বেতনভাতা পরিশোধ করা শুরু হয়েছে।’



‘দোকান-পাট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় একদিকে মালিকদের আয় যেমন বন্ধ হয়েছে, তেমনি কর্মচারীরাও বিপাকে পড়েছেন। বেশিরভাগ দোকান মালিকের কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার সামর্থ্য নেই। ফলে তাঁরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।’



শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘আমরা ঈদের আগে স্বাস্থ্যবিধি এবং অন্যান্য নিয়মনকানুন মেনে কিছু কিছু দোকানপাট খুলে দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছি। যাঁরা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলেছেন এবং যাঁরা দোকানে কেনাকাটা করতে যাচ্ছেন, আপনারা অবশ্যই নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন। ভিড় এড়িয়ে চলবেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘আপনার সুরক্ষা আপনার হাতে। মনে রাখবেন, আপনি সুরক্ষিত থাকলে আপনার পরিবার সুরক্ষিত থাকবে, প্রতিবেশী সুরক্ষিত থাকবে, দেশ সুরক্ষিত থাকবে।’



করোনা নিয়ে দিলো বড় সুখবর, ১১ দিন পর হবে না আর সংক্রমণ



বিজ্ঞানীরা বলেছেন, কোনও একজন করোনাভাইরাস রোগী আক্রান্ত হওয়ার ১১ দিন পর অসুস্থ থাকলেও তারা অন্য কাউকে সংক্রমিত করতে পারেন না। সিঙ্গাপুরের গবেষকদের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর ডেইলি মেইলের।



গবেষকরা বলছেন, লক্ষণ দেখা দেয়ার প্রায় দুইদিন আগে থেকে একজন আক্রান্ত ব্যক্তি সংক্রমণ ছড়াতে পারে। পরবর্তীতে জ্বর এবং নতুন ও ক্রমাগত কাশিসহ বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়ার পর ৭ থেকে ১০ পর্যন্ত সংক্রমণ ছড়াতে পারেন আক্রান্ত ব্যক্তি।



সিঙ্গাপুরের এই গবেষক দল বলছে, ১১ দিন অসুস্থ থাকার পর কোভিড-১৯ কে আলাদা বা কালচার করা যায়নি। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজেস এবং



দ্য অ্যাকাডেমি অব মেডিসিনের গবেষকরা ৭৩ জন করোনাভাইরাস রোগীর ওপর গবেষণা চালিয়ে এমন তথ্য জানিয়েছেন। নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে অন্য কাউকে সংক্রমিত করে কিনা সেটা দেখতে চেয়েছেন গবেষকরা। তারা দেখেছেন যে, আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে দুই সপ্তাহ পর করোনাভাইরাস থাকলেও তারা অন্যকে সংক্রমিত করতে পারেন না।



এরপর গবেষকরা লিখেন, করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর যে ডাটা সংগ্রহ করা হয়েছে, তাতে দেখা গেছে, লক্ষণযুক্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে লক্ষণ দেখা যাওয়ার দুইদিন আগে সংক্রমণের সময় শুরু হয় এবং এটা ৭-১০ দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।



তারা আরও লিখেন, প্রথম সপ্তাহের পর অ্যাক্টিভ ভাইরাল রেপ্লিকেশন খুব দ্রুত কমতে থাকে এবং দ্বিতীয় সপ্তাহে এটা কাউকে সংক্রমিত করতে পারে না।