প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় চীনের আলীবাবা ফাউন্ডেশন এবং জ্যাক মা ফাউন্ডেশনের দেয়া ৫০টি ভেন্টিলেটর, ডিটেকশন কিট, থার্মোমিটার, মাস্ক, প্রটেকটিভ ক্লোদিং, ফেস শিল্ড, গ্লাভসসহ সাড়ে ছয় লাখ জরুরি স্বাস্থ্যসামগ্রী হস্তান্তর করেছে মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ।



চীনা ই-কমার্স জায়ান্ট আলীবাবা গ্রুপের অ্যাফিলিয়েট অ্যান্ট ফিন্যান্সিয়াল দেশীয় প্রতিষ্ঠান বিকাশের মালিকানার অন্যতম অংশীদার।



বৃহস্পতিবার (৪ জুন) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে তার কার্যালয়ে মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের কাছে বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর এসব জরুরি স্বাস্থ্যসামগ্রী হস্তান্তর করেন।



ক্রান্তিকালীন এই সময়ে এসব স্বাস্থ্যসামগ্রী জরুরি কাজে আসবে উল্লেখ করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।



বিশেষ এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং করোনা প্রতিরোধী কার্যক্রমকে আরও কার্যকরী করতে বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান আলীবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা-র উদ্যোগে এবং বিকাশের ব্যবস্থাপনায় মানবিক সহায়তা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ এই স্বাস্থ্যসামগ্রী পাঠানো হয়েছে।



৫০টি ভেন্টিলেটরসহ এই তালিকায় রয়েছে ২০ হাজার কোভিড-১৯ ডিটেকশন কিট, ৬০ হাজার কেএন-৯৫ মাস্ক, ৩ লাখ ফেস মাস্ক, ২ লাখ ইন্সপেকশন্স গ্লাভস, ১৫ হাজার ফেস শিল্ড, ১৫ হাজার প্রটেক্টিভ ক্লোদিং, ৮০টি থার্মোমিটার, ২০ হাজার নিউক্লিক অ্যাসিড আইসোলেশন এবং ২০ হাজার স্যাম্পল প্রিজারভেশন সলিউশন্স।



বিকাশ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর বলেন, আমাদের কৌশলগত অংশীদার আলীবাবা গ্রুপের পক্ষ থেকে এই সামগ্রী বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে পৌঁছাতে পেরে আমরা আনন্দিত। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিনিয়োগের মাধ্যমে অংশগ্রহণই কেবল নয়, এদেশের মানুষের ভালো থাকাও নিয়েও জ্যাক মা এবং তার প্রতিষ্ঠান দুটি সচেতন। তাই জরুরি মুহূর্তে তারা এই সহায়তা পাঠিয়েছেন।



এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিকাশের চিফ এক্সটার্নাল অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মেজর জেনারেল (অব.) শেখ মো. মনিরুল ইসলাম।



গত ২৪ ঘন্টায় বাড়িতেই মারা গেছেন ১২ জন করোনা রোগী



দেশে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ২ হাজার ৪২৩ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। একই সময়ে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ৩৫ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় প্রাণহানি হলো মোট ৭৮১ জনের।



মারা যাওয়া ৩৫ জনের মধ্যে ২৯ জন পুরুষ আর ৬ জন নারী। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ২১ জন, চট্টগ্রামের ৯ জন, সিলেটের ২ জন, খুলনার ১ জন এবং রাজশাহীর ১ জন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ২২ জন এবং বাড়িতে ১২ জন। এছাড়া মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে একজনকে। এ নিয়ে দেশে করোনায় প্রাণহানি হলো মোট ৭৮১ জনের।



বৃহস্পতিবার দুপুরে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।



তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০ টি ল্যাবে ১২ হাজার ৬৯৪ টি নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ৪২৩ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত হলেন মোট ৫৭ হাজার ৫৬৩ জন।



ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ৫৭১ জন করোনা রোগী। এ নিয়ে মোট ১২ হাজার ১৬১ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।



গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় এবং ১৮ মার্চ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে।