করো’না মোকাবেলায় অক্সফোর্ডের তৈরি করা টিকা (ভ্যাকসিন) আরেকটি পরীক্ষায় সফল হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, তাদের ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ প্রয়োগ করলে প্রা’ণীর শরীরে অধিকতর শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়।



ভ্যাকসিনটি আগামী অক্টোবরে বাজারে আসবে। এর আগে সেপ্টেম্বরের কথা বলা হয়েছিল। ভ্যাকসিনটির নাম ‘এজেডডি১২২২’। অক্সফোর্ডের সঙ্গে যৌথভাবে এটি তৈরি করছে যু’ক্তরাজ্যের ওষুধ কম্পানি ‘অ্যাস্ট্রাজেনেকা’। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং কার্যকারিতা জানার জন্য মাস দুয়েক আগে পরীক্ষামূলকভাবে ভ্যাকসিনটি মানব শরীরে প্রয়োগ করা হয়।



সম্প্রতি প্রয়োগ করা হয় শূকরের দেহে। তাতে দেখা গেছে, দুটি ডোজ প্রয়োগের ফলে শূকরের শরীরে শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। প্রথম ডোজকে বলা হচ্ছে ‘প্রাইম’। আর দ্বিতীয় ডোজের নাম ‘বুস্ট’। অনেক ভাই’রাসের ক্ষেত্রেই দুটি ডোজ প্রয়োগ করা হয়। হাম, রুবেলা ও শি’শুদের নিউমোনিয়া টিকার ক্ষেত্রে দুটি ডোজ দেওয়া হয়।



ফ্লু জাতীয় রোগের ক্ষেত্রে যেসব টিকা রয়েছে, সেগুলো বাজারজাত করার আগে সাধারণত শূকরের শরীরে প্রয়োগ করা হয়। কারণ ফ্লু জাতীয় রোগের টিকা শূকর ও মানুষের শরীরে প্রায় একই ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। ‘এজেডডি১২২২’ পরীক্ষামূলকভাবে মানব শরীরে প্রয়োগ হলেও এর কার্যকারিতা এখনো প্রমাণিত হয়নি। কিন্তু এরই মধ্যে বিপুল পরিমাণে এই টিকার উৎপাদন শুরু করেছে ‘অ্যাস্ট্রাজেনেকা’। ‘এজেডডি১২২২’ তৈরির সঙ্গে যেসব বিজ্ঞানী রয়েছেন, তাঁদের একজন অধ্যাপক আদ্রিয়ান হিল। তিনি জানান, অক্টোবরে ভ্যাকসিনটি বাজারে আসতে পারে। যদিও অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করেন, ২০২১ সালের আগে কোনো ভ্যাকসিন বাজারে আনা সম্ভব নয়।



‘অ্যাস্ট্রাজেনেকা’র প্রধান নির্বাহী কর্মক’র্তা এর আগে বলেন, ‘আমা’র বিশ্বা’স ভ্যাকসিনটি এক বছরের জন্য সুরক্ষা দেবে।’ যদিও এর পক্ষে বৈজ্ঞানিক কোনো প্রমাণ নেই। ফ্লু জাতীয় অন্যান্য রোগের টিকা সর্বোচ্চ ছয় মাসের জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি করে। সূত্র : ডেইলি মেইল।



এই প্রথম করো’নার চীনা ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত ধাপের ট্রায়াল শুরু আমিরাতে



নভেল করো’নাভাই’রাস প্রতিরোধী সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শুরু হয়েছে সংযু’ক্ত আরব আমিরাতে। মঙ্গলবার ভিডিও কনফারেন্সের ভা’র্চুয়াল বৈঠকে বেইজিং এবং আবু ধাবির চিকিৎসকেরা এই কার্যক্রম শুরুর ঘোষণ দেন। পৃথিবীতে এই প্রথম করো’নার কোনো ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত ধাপের ট্রায়াল শুরু হল।



গালফ নিউজ এবং চীনের গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, এই ট্রায়ালের জন্য চায়না ন্যাশনাল বায়োটেক গ্রুপ (সিএনবিজি) এবং আবু ধাবির গ্রুপ ৪২-এর মধ্যে চুক্তি হয়েছে। আবু ধাবির স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এই কার্যক্রম পরিচালনা করবে গ্রুপ ৪২।



ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে সাধারণত তিনটি ধাপ অনুসরণ করা হয়। প্রথম ধাপের চেয়ে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপ বেশি চ্যালেঞ্জিং। এই দুই ধাপে একসঙ্গে অনেক মানুষকে যু’ক্ত করা হয়। চূড়ান্ত ঝুঁ’কি এখানেই বোঝা যায়।



আমিরাতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আবদুল রহমান মোহাম্ম’দ আল ওবাইস বলছেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের বেশি বেশি চুক্তিভিত্তিক কাজ করা দরকার। মহামা’রী মোকাবিলায় বিশ্বের যেকোনো দেশের এমন পদক্ষেপকে আম’রা স্বাগত জানাতে চাই।’



চীন ইতোমধ্যে দুটি ভ্যাকসিনের প্রথম দুই ধাপের ট্রায়াল শেষ করেছে। দুটিতেই তারা সফলতা পেয়েছে। সিএনবিজির ভ্যাকসিন প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপে ২৮ দিনে শতভাগ মানুষের শরীরে করো’না প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে চীন। এই ভ্যাকসিনটি ইতিমধ্যে চীনের সরকারি কর্মক’র্তাদের দেয়া শুরু হয়েছে।



চীন বলছে চলতি বছরের শেষ দিকে অথবা সামনের বছরের শুরুতে ভ্যাকসিনটি বাজারজাত করা হবে। ইতিমধ্যে দেশটির কর্মক’র্তারা কথা দিয়েছেন প্রথম যে দেশগুলো ভ্যাকসিন পাবে, বাংলাদেশ তার মধ্যে থাকবে।