ইসলামী শরিয়ত মতে নারী ও পুরুষ কোরআনে বর্ণিত অংশানুযায়ী প্রত্যেকে নিকটাত্মীয়ের সম্পদের অধিকারী হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মা-বাবা ও নিকটতর আত্মীয়দের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষের অংশ আছে এবং মা-বাবা ও নিকটতর আত্মীয়দের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীরও অংশ আছে। তা অল্পই হোক বা বেশি, এক নির্ধারিত অংশ। (সুরা নিসা, আয়াত : ৭)এই নির্ধারিত অংশ যেন সবাই যথাযথভাবে পায় সে ব্যাপারেও আল্লাহ কঠোর



হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘এসব আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অনুসরণ করবে আল্লাহ তাকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। সেখানে তারা স্থায়ী হবে এবং এটা মহা সাফল্য। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অবাধ্য হবে এবং তাঁর নির্ধারিত সীমাকে



লঙ্ঘন করবে তিনি তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। সেখানে সে স্থায়ী হবে এবং তার জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর শাস্তি। (সুরা নিসা, আয়াত : ১৩-১৪) বহু মুসলিম সম্পদের মোহে পড়ে নিজের আপনজনকে প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক মিরাস বণ্টন করে না। উত্তরাধিকার সম্পত্তি থেকে পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি বঞ্চিত হয়। মুফতি রশিদ আহমদ (রহ.) নারীদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার প্রধান তিনটি দিক তুলে ধরে তা সরাসরি ইসলামী



শরিয়তের পরিপন্থী ও জুলুম হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তা হলো—এক. বিধবা নারীকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা। বিধবা নারী যদি স্বামীর সন্তানের মা না হয়, তবে তাকে পিতার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং তাকে সব ধরনের সম্পদ ও অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। বিশেষত স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবা যদি অন্যত্র বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হয় তাকে মৃত স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হয়।



দুই. কোনো কোনো অঞ্চলে এই প্রচলন আছে, স্ত্রী স্বামীর বংশের না হলে তাকে স্বামীর পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হয়। এটাও চরম মূর্খতা ও অবিচার। বিধবা চাই স্বামীর বংশের হোক বা অন্য বংশের, দ্বিতীয় বিয়ে করুক বা না করুক সর্বাবস্থায় তার নির্ধারিত অংশ তাকে দিতেই হবে।



তিন. বোনের অংশ না দেওয়া। বোনের বিয়েতে যৌতুক বা উপহার দেওয়ার অজুহাতে বহু পরিবার মেয়ে বা বোনের অংশ দেয় না। অথচ যৌতুক বা উপহার মেয়ে বা বোনকে উত্তরাধিকার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে না; বরং যৌতুক দেওয়া ও উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা উভয়টিই অপরাধ। একটি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অপরাধ আর মিরাস, অন্যটি ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে অপরাধ।
তথ্যসূত্র : আহসানুল ফাতাওয়া, খণ্ড-৯