রান্নায় তেজপাতার জাদু সম্পর্কে নিশ্চয়ই জানেন। খাবারে খুব সুন্দর একটি ঘ্রান এনে দেয় এই তেজপাতা। তাছাড়া দেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধেও তেজপাতা খুবই উপকারী। জানেন কি শুধু খেলেই নয়, ঘরে এই পাতা পোড়ালেও মিলবে বিস্ময়কর উপকারিতা!



কি, বিশ্বাস হচ্ছে না? তবে আজ নিজেই ঘরে বসে তেজপাতা পুড়িয়ে করে ফেলুন ছোট্ট একটি পরীক্ষা। আর ফলাফল দেখে নিন আপনার চোখের সামনেই।



আয়ুর্বেদ জানাচ্ছে, কেবল তেজপাতা খাওয়াতেই নয়, পোড়ালেও অনেক উপকার পাওয়া যায়। একটি হেলথ ওয়েবসাইট ‘হেলদি ফুড ট্রিকস’-এ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তেজপাতা বিষয়ক এই তথ্য।



সেখানে বলা হয়েছে, একটি ছাইদানিতে কয়েকটি তেজপাতা নিয়ে ১০ মিনিট ধরে পোড়ান। এতে পাতা যেমন পুড়বে, তেমনই পুড়বে এর মধ্যে থাকা অপরিহার্য তৈল উপাদানও। তেজপাতা পোড়ালে ধীরে ধীরে ঘরে সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। এই ভেষজ গন্ধ মনকে সতেজ করে দেবে। এটি মন-শরীরকে যেমন প্রশমিত করতে সাহায্য করে, তেমনই এতে মানসিক চাপ ও উদ্বেগও কমবে।



ইউরোপীয় বিভিন্ন শাস্ত্রে বলা হয়েছে, প্রাচীন গ্রিক ও রোমানরা তেজপাতাকে পবিত্র ওষুধ বলত। বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে তেজপাতাকে অপরিহার্য বলে ধরা হয়। উপমহাদেশে এই পাতাকে মসলা হিসেবে ব্যবহার করেন। রান্নার স্বাদ বাড়াতে ও সুগন্ধ আনতে এর ব্যবহার করা হয়।



বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, তেজপাতার মধ্যে রয়েছে পিনেনে ও সাইনিয়ল নামে দুটি উপাদান। রয়েছে তৈল উপাদান। এর মধ্যে রয়েছে সাইকো-অ্যাকটিভ পদার্থ। পাশাপাশি, এতে রয়েছে জীবানুনাশক, ডিওরেটিক, সিডেটিভ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি মন-মেজাজকে ভালো করে, সঙ্গে তেজপাতা পাকস্থলীর ফ্লু নিরাময়েও সাহায্য করে। তেজপাতার এসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে ম্যাসাজ করলে মাথাব্যথা কমে।



বছরে মা’রা যাবে ৭ লক্ষ মানুষ শুধু ব্রয়লার মুরগী খাওয়ার কারণে



মাংস উৎপাদনের উদ্দেশ্যে লালন-পালন করা ব্রয়লার মুরগী সহ সব ধরনের পশুকেই নিয়মিত ভাবে প্রায় প্রতিদিনই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ানো হয়। প্রতি বছর বিশ্বে এই উদ্দেশে প্রায় ৬৩ হাজার ১৫১ টন অ্যান্টিবায়োটিক লাগে। ব্রয়লার মুরগী কমবেশি আমাদের সকলেরই পছন্দ। চাহিদাও বাড়ছে দিনদিন।



কিন্তু শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ব্রয়লার মুরগীতে এবং দানা বাঁধে ক্যান্সার শরীরে। পোলট্রির মুরগি খেলে একাধিক অ্যান্টিবায়োটিক আমাদের শরীরে আর কাজ করবে না। তথ্য উঠে এসেছে একাধিক গবেষণায় এসব। ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা মাত্র পাঁচ সপ্তাহেই প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায় এটাই দেখা যায়!



পুশ করে দেওয়া হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন। হু হু করে বাড়ছে ওজন। চড়চড় করে বড় হচ্ছে মুরগি। অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ালে যে খাদ্য গ্রহণ করে পশুরা তা থেকে সহজেই তাদের দেহে মাংসপেশি উৎপাদিত হয়।



আগেভাগে প্রয়োগ করা অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাবে সহজে রোগবালাইয়ে আক্রান্ত না হওয়ার কারণেই এমনটা ঘটে। ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই। ছোটখাটো পেটের রোগ, গ্যাস, অম্বল, সর্দিকাশি, ইনফেকশনের ক্ষেত্রেও অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করবে না।



রোগ সারাতে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিকের সাহায্য নিতে হবে ডাক্তারদের। আমাদের শরীরে যে অ্যান্টিবায়োটিকের একাধিক কুপ্রভাব পড়বে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।।



ফুড পয়জনিং হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায় ব্রয়লার চিকেন খেলে। একাধিক গবেষণয়া দেখা গেছে প্রায় ৬৭ শতাংশ ব্রয়লার মুরগির শরীরে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া থাকে যা কোনও ভাবেই কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য ভালো নয়।



বাজার থেকে ব্রয়লার মুরগির মাংস কিনে কখনই বাকি খাবার বা সবজির সঙ্গে সেটি রাখবেন না। শুধু তাই নয়, যে ছুরি দিয়ে মাংসটা কাটবেন তা দিয়ে ওই সময় সবজি কাটবেন না।



কাঁচা মাংসে প্রচুর মাত্রায় ব্যাকটেরিয়া থাকে। আর দোকানে যেভাবে একাধিক মুরগিকে এক সঙ্গে রাখা হয় তাতে দু-পাঁচটার শরীরে সেই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলি প্রবেশ করে না যাওয়াটা কোনও অস্বাভাবিক নয়, এই জীবাণু যদি আমাদের শরীরে প্রবেশ করে তাহলে আর রক্ষা নেই।



দেশি মুরগি একেবারে প্রকৃতির নিয়ম মেনে বড়হয়। দেশি মুরগিতে এমন কিছু ক্ষতিকারক জিনিস পাওয়া যায়নি। এক রিপোর্টে জানা যায়, প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া কমে যাওয়ায় একটি গুরুতর হুমকির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে মানবসভ্যতা। যা বছরে ৭ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াবে। শেষ হবে সম্পদ আর দেশ হারাবে জাতীয় উৎপাদনশীলতা।