মাত্র ১১দিন আগে অনেকটা ঘটা করেই বিয়ে হয়েছিল নূরুন্নাহার খাতুনের (১৯)। বিয়ের সকল রীতিনীতি পালন করে শ্বশুরবাড়িতে এক সপ্তাহ অবস্থানের পর স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়ি ফিরে আসে শুক্রবার ।আর শনিবার বিকালেই ঘর ভাঙে নূরুন্নাহারের।



৩২ বছর বয়সী বর মোনছের আলী শ্বশুর বাড়ি এসে নববধূ নূরুন্নাহারকে তা’লাক দিয়ে শাশুড়ি মাজেদা বেগমকে (৪০) বিয়ে করে চলে যান নিজ বাড়িতে।শাশুড়ি মাজেদা এখন মোনছের আলীর ঘরণী হয়ে দিব্যি সংসার করছেন। চা’ঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার কড়িয়াটাআটা গ্রামে।



জানা যায়, ধনবাড়ী উপজেলার হাজরাবাড়ী পূর্বপাড়া গ্রামের ওয়াহেদ আলীর ছেলে মোনছের আলী গোপালপুর উপজেলার কড়িয়াটা গ্রামের নূর ইসলামের কন্যা নূরুন্নাহার খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরদিন শ্বাশুড়ি মাজেদা বেগম মেয়ের বাড়ি বেড়াতে যান। মেয়ের সঙ্গে এক সপ্তাহ সেখানে অবস্থানের পর গত শুক্রবার মেয়ে-জামাইসহ নিজ বাড়ি ফেরেন।



শনিবার সকালে নববিবাহিত নূরুন্নাহার মোনছেরের সঙ্গে সংসার করবেন না বলে বায়না ধরেন। শুরু হয় পারিবারিক ক’লহ। শাশুড়ি মাজেদা বেগম তখন সবার সামনে বলেন, নূরুন্নাহার সংসার না করলে তিনি নতুন জামাতার সংসার করবেন।



মাজেদা বেগমের এমন বক্তব্যে অ’সহায় শ্বশুর নূর ইসলাম গ্রাম্য সালিশ ডাকেন। হাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কাদের তালুকদার, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামসহ এলাকার গ’ণ্যমাণ্য ব্যক্তিরা সালিশে বসেন। সামাজিক বিচারে মাজেদা বেগম ও মোনছের আলীকে মা’রধর করা হয়।



এরপর পরিবারের সম্মতিতে নূর ইসলাম প্রথমে স্ত্রী মাজেদা বেগমকে তা’লাক দেন। এরপর বর মোনছের আলী নবপ’রিণীতা নূরুন্নাহারকে তালাক দেন।এরপর একই অনুষ্ঠানের সবার উপস্থিতিতে মোনছের আলীর সঙ্গে মাজেদা বেগমের এক লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়।



হাদিরা ইউনিয়নের নি’কাহ রেজিস্ট্রার কাজী জিনাত বিয়ে রেজি’স্ট্রি করেন। তিনি জানান, ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বার, গ্রাম্য মাতব্বর এবং ওই পরিবারের সকল সদস্যের সম্মতিতে দু’টি তা’লাক এবং একটি বিবাহের কাজ একই অনু’ষ্ঠানে সম্পাদন করা হয়।



ইউপি মেম্বার নজরুল ইসলাম জানান, পুরো কাজটি হয়েছে ওই পরিবারের সম্মতিতে। তবে শাশুড়ি বিয়ে করার ঘ’টনায় আ’পত্তি থাকায় গ্রামবাসীদের উপ’স্থিতিতে মোনছের ও মাজেদাকে শা’রীরিক শা’স্তি দেয়া হয়।



ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কাদের তালুকদার জানান, শাশুড়ি বিয়ের খবরে ক্ষু’ব্ধ গ্রামবাসী বাড়ি ঘেরাও করে মা’রপিট শুরু করেন। খবর পেয়ে তিনি ঘট’নাস্থলে যান। পরিবারের সকলের সম্মতির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তিনি বিয়ের সম্মতি দেন।এদিকে শ্বা’শুড়িকে বিয়ের খবরে দু’দিন ধরে বহুমানুষ ভিড় করছে মোনছের আলীর বাড়িতে।