আজকাল অনিদ্রা আর স্ট্রেসের কারণে মাথা যন্ত্রণা অনেকেরই পিছু ছাড়ে না। কাজ করার সময়ও যন্ত্রণা, শুতে গেলেও একই ঘটনা। কী যে করা যায়, তাই যখন মাথায় আসছে না, তখনই বিনা মেঘে বজ্রপাত! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশ কয়েকরকম ভাবে চুল বাঁধলেও নাকি মাথা যন্ত্রণা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে। ভাবছেন কী করণীয়? প্রথমত, মাথা যন্ত্রণার কারণ খুঁজে বের করতে হবে।



ঠিক মতো ঘুম না হওয়ার কারণে যন্ত্রণা হচ্ছে, নাকি স্ট্রেস বা মাইগ্রেনের কারণে, সেই নিয়ে একটু খোঁজ-খবর করে নেওয়া জরুরি। যদি দেখেন সেই সব ঝামেলা নেই, তা হলে চোখটা একটু দেখিয়ে নিন। অনেক সময় চোখের পাওয়ার বাড়লে কিংবা পাওয়ার হলেও চোখে-কপালে ব্যথা হয়। আর যদি কোনও সমস্যার সন্ধান না পান, তা হলে মনে কোনও সন্দেহ রাখবেন না যে, টেনে চুল বাঁধার কারণেই এই সমস্যার সূত্রপাত! কী-কী ভাবে চুল বাঁধলে তা মাথাব্যাথার (headache) কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, চলুন সেই নিয়েই একটু আলোচনা করা যাক!



চুল বাঁধার সঙ্গে মাথা যন্ত্রণার সম্পর্কঃ প্লাস্টিকের ব্যান্ড দিয়ে টেনে চুল বাঁধলে স্ক্যাল্পে তো টান পরেই, সেই সঙ্গে hair follicle-এও চাপ বাড়তে থাকে। আর এই দুই চাপ একযোগে চাপ ফেলে মাথার নানা নার্ভের উপর, যা মাথা যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের তো ভুলেও টেনে চুল বাঁধা উচিত নয়। কারণ, এমন ধরনের সমস্যায় স্ক্যাল্প এবং মুখের চারিপাশের নার্ভ এতটাই স্পর্শকাতর হয়ে যায় যে, সামান্য চাপ পড়লেই সমস্যা দেখা দেয়। তাই তো মাইগ্রেন রোগীদের টেনে-টেনে চুল আঁচড়াতে এবং টেনে চুল বাঁধতে মানা করেন বিশেষজ্ঞরা।



কোন-কোন হেয়ারস্টাইল একেবারেই করা উচিত নয়ঃ চুল বাঁধার কারণে যদি মাথার যন্ত্রণাকে সঙ্গী করতে না চান, তা হলে নীচে বলা হেয়ারস্টাইলগুলি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন…



১.হাই পনিটেল, মানে চুল পিছন দিকে টেনে মাথার টংয়ে তুলে একটি টেনে ঝুঁটি।
২.শক্ত করে গোড়া বেঁধে বিনুনি।
৩.টাইট টপ নট, মানে, মাথার উপরে তুলে শক্ত করে খোঁপা।



৪.কপালের সামনে থেকে গুছি করে বিনুনি তারপর টেনে বিনুনি।
৫.চুলে স্প্রে করে একেবারে টেনে, পাতিয়ে আঁচড়ে শক্ত করে পনিটেল।
৬.টাইট সাগরচটি বা ক্রস ব্রেইডস।



এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপয়ঃ-



১.কোনও পরিস্থিতিতেই টেনে চুল বাঁধা চলবে না। তাই ponytail এবং bun-এর মতো স্টাইল এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।
২.পনিটেল করার সময় টেনে চুল না বেঁধে, সামনের দিকটা একটু ছেড়ে রাখতে পারেন, তা হলেই আর স্ক্যাল্পে টান পড়বে না। ফলে মাথা যন্ত্রণাও হবে না।



৩.যেদিন-যেদিন মাথা যন্ত্রণা করবে, সেদিন-সেদিন চুল খোলা রাখবেন, তাতে মাথা যন্ত্রণা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আর থাকবে না।
৪.যে-কোনও হেয়ারস্টাইল করার সময়ই একটু আলগা করে চুল বাঁধুন।



যাঁরা নিয়মিত টেনে চুল বাঁধেন, তাঁদের কথায় কথায় মাথা যন্ত্রণা হওয়ার আশঙ্কা তো থাকেই, সেই সঙ্গে চুল পড়ার হারও বেড়ে যায়। বিশেষ করে হেয়ার লাইনের আশেপাশের অংশে চুল পাতলা হয়ে যেতে সময় লাগবে না। অসময়ে চুল পড়ে ময়দান ফাঁকা হয়ে যাক, এমনটা যদি না চান, তাহলে এমন সব হেয়ার স্টাইল এড়িয়ে চলাই বাঞ্ছনীয়।



টেনে চুল বাঁধলে আরও একটা সমস্যা হয়ঃ মাথা যন্ত্রণার প্রকোপ কমাতে বেশ কিছু ঘরোয়া চিকিৎসার উপরও ভরসা রাখতে পারেন। যেমন ধরুন, অনেকেই বলেন চামচ দুয়েক আদার রসের সঙ্গে সম পরিমাণ পাতি লেবুর রস মিশিয়ে খেলে নাকি মাথা যন্ত্রণা কমে যায়। Lavender Oil-এর গন্ধও শুঁকতে পারেন। তাতেও অনেক সময় কষ্ট কমে যায়। কয়েক চামচ দারচিনি গুঁড়ো নিয়ে তাতে অল্প পরিমাণে জল মিশিয়ে তৈরি পেস্ট কপালে লাগিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। দেখবেন, অল্প সময়েই কষ্ট কমে যাবে।