Breaking News

মাংসে লবণ কম হয়েছে বলায় জামাইকে পিটালেন শ্বাশুড়ি!

বাংলা সাহিত্যে জামাই ষষ্ঠীর তেমন রমরমা দেখা না গেলেও, অস্বীকার করার উপায় নেই, বাঙালির সংস্কৃতিতে জামাই ষষ্ঠী একটা রীতিমতো জম্পেশ ব্যাপার। মনে রাখতে হবে, সেলুলয়েডে বাঙালির বোল ফুটেছিল জামাই ষষ্ঠীরই কল্যাণে। ১৯৩১ সালে তোলা হয় বাংলার প্রথম সবাক কাহিনিচিত্র ‘জামাই ষষ্ঠী’।

পরিচালক ছিলেন অমর চৌধুরী। সেই ছবি দেখার সৌভাগ্য না হলেও অনুমান করা যায়, সে ছবি ছিল নির্ভেজাল কমেডি। সেকালের ছায়াছবির দস্তুর মোতাবেক তা স্ল্যাপস্টিক কমেডিও হতে পারে। কিন্তু ভাবার ব্যাপার একটাই, কেন অমরবাবু তাঁর প্রথম সবাক ছবির বিষয় হিসেবে জামাই ষষ্ঠীকে বেছে নিলেন?

একটু তলিয়ে ভেবে দেখলে বোঝা যায়, জামাই ষষ্ঠী এমন এক পরব, যার খাতির রয়েছে, কিন্তু মান নেই। মানে, জামাই নামক সম্পর্কটাকে ধরে খাতিরদারি দেদার এই উৎসবের, কিন্তু বাজারে কেমন যেন একটা তিরছি নজরে দেখা হয় জামাই ষষ্ঠীকে। জামাইয়ের আদর আছে, কিন্তু জামাই ষষ্ঠী কেমন যেন একটা টিটকিরি-মাখা অ্যাফেয়ার।

কিন্তু আদতে এই অনুষ্ঠানটির পিছনে ছিল সংসারের শুভকামনা আর পরবর্তী প্রজন্মের কল্যাণের আকাঙ্ক্ষা। ষষ্ঠীদেবীর উৎস লৌকিক। শাস্ত্র-পুরাণে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। লোকজীবনে সন্তান-কামনা ও সন্তানের সার্বিক শ্রী কামনা করেই তাঁর ব্রত ধারণ করে আসছেন মহিলারা।

জামাই ষষ্ঠী তার ব্যতিক্রম নয়। কন্যাসন্তানের সুবাদে পরিবারে আগত জামাতাকেও সন্তান হিসেবে বরণ করে নেওয়ার অভিজ্ঞান এই আচারের পরতে পরতে। সেই অনুষঙ্গেই খাওয়াদাওয়া। আরও একটা সামাজিক ব্যাপার এই আচারের মধ্যে নিহিত।

সেটা এই পালন উপলক্ষে কন্যার পিতৃগৃহে আগমন। সেকালে মেয়েদের বাপের বাড়ি যাওয়া খুব নিয়মিত ছিল না। দূরে বিয়ে হলে তো কথাই নেই! কলকাতার বনেদি বাড়িগুলোয় বিশ শতকের প্রথমার্ধেও বউ আনা হত দূর থেকে। এর পিছনে একটা পুংতান্ত্রিক কলকাঠি কাজ করত অবশ্যই।

বউ যাতে সহজে বাপের বাড়ি যেতে না পারে, তার বন্দোবস্ত আর কি! কিন্তু এহেন বজ্র আঁটুনির মাঝখানেই ষষ্ঠী ঠাকরুন খাপ পাততেন। জামাই ষষ্ঠী সেই পুংতন্ত্রকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে মেয়েদের নিজস্ব এক আচার, যেখানে জামাইয়ের সঙ্গে মেয়ের আগমনটাও সুনিশ্চিত। আর বছরে কবারই বা জামাই আসেন শ্বশুরবাড়িতে! ফলে খাতিরদারি জমজমাট।

একমাত্র মেয়ের বিয়ের পর মেয়েকে অন্যের বাড়ি না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দিলেন বাবা। তাই বিয়ের পর জামাইয়ের ঠিকানা হলো শ্বশুরবাড়িতে। বাংলাদেশে এই জামাইকে বলা হয় ঘর জামাই। ঘর জামাই হয়ে যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়ে গেল এই জামাই।

এটা খাবে ওটা খাবে করে সারাক্ষন মাথা পাগল করে রাখতো এই জামাই।আর এতেই অস্থির করে রাখতো শ্বশুড়বাড়ির লোকদের। খাবার নিয়ে সারাক্ষন ঘ্যান ঘ্যান করতো জামাই। সব খাবারে ভুল ধরাতেই ছিল তার একমাত্র লক্ষ্য।

দুপুরে খাবারে বসেই মুখে খাবার তুলে বলে ফেললেন, তরকারিতে লবন কম হয়েছে। আর এই কথা বলার পর যেন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন শ্বাশুড়ি। মাংসে লবন কম হয়েছে এই কথা বলার পর জামাইকে চামচ দিয়ে পি’টালেন শ্বাশুড়ি।
নিউজটি শেয়ার করার অনুরোধ রইলো

Check Also

স্ত্রী হিসেবে মোটা মেয়েরা সবচেয়ে বেশি ভালো! কেন জানেন?

স্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে শতকরা ৯০ শতাংশ পু'রুষেরই পছন্দের তালিকায় রোগা মেয়েরা থাকে। তাদের মধ্যে ধারণা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *