বিভিন্ন পত্রিকায় প্রায়শই দেখা যায় ‘উন্নত দেশগুলোর নাগরিকত্ব জুড়ে দিয়ে’ পাত্র চাই বিজ্ঞাপন। এমনই একজন পাত্রী সাদিয়া জান্নাত ওরফে জান্নাতুল।



কানাডা প্রবাসী, শর্ট ডিভোর্সি অথচ নিঃ’সন্তান সুন্দরী- এমন নানা উপমা দিয়ে পত্রিকায় মনভোলানো বিজ্ঞাপন দিতেন। বিয়ে করে বিদেশে আয়েশি জীবনের সেই হাতছানির ফাঁ’দে পা দিলেই



হা’তিয়ে নিতেন কোটি কোটি টাকা। এভাবে জান্নাত অন্তত ২০ কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন।মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন সি আই ডির মিডিয়া কর্মকর্তা সিনিয়র এসপি জিসানুল হক।



প্র’তারণার শি’কার একজনের অ’ভিযোগের প’রিপ্রে’ক্ষিতে জান্নাত এখন পুলিশের খাঁ’চায়।তবে শুধু জান্নাতই নয়, এমন অ’ভিযোগে জান্নাতের সহযোগী আরো চারজনকে গ্রে”প্তার করেছে ক্রা”ইম ই’নভেস্টিগেশন ডিভিশন (সি আই ডি)।



তারা হলেন- জান্নাতের দ্বিতীয় স্বামী হাসান ওরফে জিহাদ, সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, ফিরোজ মিয়া ও তামান্না।সিনিয়র এসপি জিসানুল হক বলেন, এসএসসি পাস করতে না পারা জান্নাত প্র’তারণায় পিএইচডি।



এ পর্যন্ত প্র’তারণার মাধ্যমে প্রায় ২০ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়েছেন তিনি। প্রথম স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করা স্বামীকে নিয়ে নামেন এই প্র’তারণায়। পরে একজনের অ’ভিযোগের ভিত্তিতে জান্নাত ও তার স্বামী এবং তিন সহযোগীকে গ্রে’প্তার করা হয়েছে।



তিনি জানান, গেল আগস্ট মাসে একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী কানাডার নাগরিক, ডিভোর্সি সন্তানহীন, নামাজি পাত্রীর জন্য ব্যবসার দায়িত্ব নিতে আগ্রহী বয়স্ক পাত্র চেয়ে একটি বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। আগ্রহীদের একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে বারিধারার একটি বাড়িতে যোগাযোগ করতে বলা হয়। পরে সি’আই ডির কাছে অ’ভিযোগ দেয়া ভু’ক্তভোগী নাজির হোসেন ওই বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করেন। পরে তার সঙ্গে গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে দেখা করেন জান্নাত। এ সময় ভু’ক্তভোগী নাজির দেড় লাখ টাকা ও পাসপোর্ট তুলে দেন জান্নাতের হাতে।



পরে জান্নাত নাজির হোসেনকে জানান, তিনি নিজেই পাত্রী। কানাডায় দুশ কোটি টাকার ব্যবসা আছে। কিন্তু বর্তমানে কানাডায় অনেক শীত থাকায় নাজির হোসেনকে নেয়া যাচ্ছে না। এরপর দেশে ব্যবসার জন্য কানাডা থেকে টাকা আনার কথা বলে ট্যা’ক্স, ভ্যা’ট, ডিএইচএল বিল ইত্যাদি খরচের কথা বলে এক কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। জান্নাত এরপর মোবাইল বন্ধ করে দেন। নাজিরের সঙ্গে যোগাযোগও বন্ধ করে দেন। পরে ভু’ক্তভো’গী নাজির হোসেন এ বিষয়ে সি আই ডিতে অ’ভিযোগ করেন।



একইভাবে অন্য একজন ভু’ক্তভোগীর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় প্রথমে জান্নাতকে গ্রে’প্তার করে সি আ ইডি। পরে জান্নাতের কাছ থেকে তিনজন ভু’ক্তভো’গীর পাসপোর্ট, ১০টি মোবাইল ফোন, তিনটি মেমোরি কার্ড, সাতটি সিল, অসংখ্য সিম, প্র’তারণার শি’কার হওয়া ভু”ক্তভো’গীদের হিসাবের খাতা ও ব্যাংক এশিয়ায় ৪৮ লাখ টাকা জমা দেয়ার স্লিপ উ’দ্ধার করা হয়।



সি আই ডির এই কর্মকর্তা জানান, উ’দ্ধার করা খাতায় বিগত দিনের প্র’তারণার হিসাব ও ভু’ক্তভো’গীদের নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়। জান্নাতের নেতৃত্বে এই চ’ক্রটি গত ১০ বছর ধরে এমন প্র’তারণা করে আসছেন। এখন পর্যন্ত সি আই ডি তাদের ২০ কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে।