Breaking News

বেশি দিন সুস্থ ভাবে বাঁচতে চাইলে আজই বাদ দিন এই ৪টি কাজ!

সব মানুষই চায় সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন।এর জন্য যে কাজ গুলো করতে হয় তা করতে গিয়ে অনেকেই হোঁচট খান। মানুষ ভবিষ্যতের লাভের জন্য বর্তমানের আনন্দকে ত্যাগ করাটা খুব কঠিন মনে করে। বর্তমান শতাব্দীতে উন্নত ঔষধ, উন্নত স্যানিটেশন, নিরাপত্তা, কাজের পরিবেশ ও ব্যাক্তি সতর্কতার ফলে বিশ্বের প্রথম সাড়ির দেশ গুলুতে গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে।

বর্তমানে একজন পুরুষের গড় আয়ু ৬৮.৫ বছর এবং একজন মহিলার গড় আয়ু ৭৩.৫বছর। শুধুমাত্র দীর্ঘ জীবন নয় সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন পাওয়ার জন্য কতগুলো পন্থা অবলম্বন করা প্রয়োজন। আসুন জেনে নেই সেই পন্থা গুলো ও এগুলো অনুসরণের মাধ্যমে সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন লাভ করি:

১। প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ বন্ধ করুন: প্রক্রিয়াজাত খাবারে অনেক বেশি চিনি, লবণ ও ফ্যাট থাকে এবং এইসব খাবারে ফাইবার/ আঁশ কম থাকে। প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলে হার্ট অ্যাটাক, হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।তাই আপনার খাদ্য তালিকা থেকে প্রসেসড ফুড বাদ দিয়ে শাকসবজি, ফলমূল ও আঁশ জাতীয় খাবার খান,ধূমপানের অভ্যাস থাকলে বাদ দিন এবং প্রচুর পানি পান করুন।

২। নেতিবাচক চিন্তা বাদ দিন: নেতিবাচকতা আপনার ভেতরের শক্তিকে নষ্ট করে দেয় এবং আপনার স্ট্রেস লেভেল বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে রাগ, হতাশা, বিষণ্ণতা ও উদ্বিগ্নতা বৃদ্ধি পায় এবং অধিক খাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। তাই নেতিবাচকতা পরিহার করে ইতিবাচক হোন। আপনার জীবনের লক্ষ্য ঠিক করুন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করুন এতে আপনার স্ট্রেস কমবে ফলে আপনি দীর্ঘজীবী হবেন।

৩। একভাবে বসে থাকবেন না: বর্তমানের একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, ব্যায়ামের মাধমে দীর্ঘমেয়াদি অসুখ যেমন- ক্যান্সার ও স্থূলতা র সম্ভাবনা কমায়। দিনে ৩০ মিনিটের ব্যায়াম আপনার আয়ু বাড়িয়ে দেবে।

২০১১ সালে The Lancet e প্রকাশিত গবেষণা পত্রে দেখা গেছে যে, দিনে ১৫ মিনিটের ব্যায়াম যারা করেছেন তাদের আয়ু ৩ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে এবং যারা দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করেছেন তাদের আয়ু ৪ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে। তাইওয়ানের ৪১৬০০০ নারী ও পুরুষ কে নিয়ে এই গবেষণাটি করা হয়। তাই দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা লাভের জন্য সারাদিনের কিছুটা সময় বেছে নিন ব্যায়ামের জন্য।

৪। রাতের ঘুম ছাড় দেবেন না: ঘুমের ব্যাপারে কার্পণ্য করবেন না। স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন এর জন্য প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন । ২০০৭ সালে ঘুম বিষয়ক একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা পত্র থেকে জানা যায় যে , ঘুমের হ্রাস বৃদ্ধি মানুষের মৃত্যু হারের উপর প্রভাব বিস্তার করে। নিয়মিত কম ঘুমালে হৃদরোগ,ডায়াবেটিস ও স্থূলতার মতো মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আর নিয়মিত ভালো ঘুম হলে স্ট্রেস, ডিপ্রেশন ও হার্ট ডিজিজ দ্রুত ভালো হয়।

বড় কোন পরিবর্তন নয় ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে নিজের জীবনযাপনের ধরণের পরিবর্তন করুন। আপনার বাবা বা দাদা অনেকদিন বেঁচে ছিলেন বলে আপনিও অনেকদিন বেঁচে থাকবেন তাই সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন লাভের জন্য আপনাকে কোন চেষ্টা করতে হবেনা এমনটা ভাববেন না। আবার আপনার পূর্ব পুরুষ রা দীর্ঘায়ু লাভ করেন নি বলে আপনি ও দীর্ঘজীবী হতে পারবেন না এই ধরণের ধারণা বা ভয় ও লালন করা ঠিক না। ইতিবাচক ভাবে চিন্তা করুন এবং জীবনে সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু লাভ করে জীবনকে পরিপূর্ণ ভাবে উপভোগ করুন।

১০ খাবার হৃদরোগ থেকে বাঁচতে বর্জন করুন

এনজিওপ্লাস্টি, বাইপাস বা কাঁটাছেড়া ছাড়াও বর্তমানে হৃদরোগের মতো প্রাণঘাতি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। প্রতিদিন কোনো না কোন মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। করোনারি আর্টারি ব্লক হয়ে মানুষ ছুটে যান ডাক্তারের কাছে।

ডাক্তার রিং বা বাইপাস করে সুস্থ করতে চান। কিন্তু রোগী এর মাধ্যমে কি সুস্থ হচ্ছেন। না, কয়দিন পরই তিনি আবার অসুস্থ হচ্ছেন বা নতুন ব্লক নিয়ে ডাক্তারের কাছে ছুটে যাচ্ছেন। এই রকম শত শত রোগীর বিনা অপারেশনে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন কোয়ান্টাম হার্ট ক্লাব।

কোয়ান্টাম হার্ট ক্লাবের কো-অর্ডিনেটর ডা. মনিরুজ্জামান এর সঙ্গে কথা হয় এ প্রসঙ্গে। তিনি জানান, অপারেশন বা রিং ছাড়া হৃদরোগ নিরাময় সম্ভব। এ জন্য আমরা মেডিটেশন ও খাবার নিয়ন্ত্রণ এর মাধ্যমে এই রোগ নিরাময় ও প্রতিরোধ করে থাকি। প্রতিমাসে হৃদরোগ নিরাময় ও প্রতিরোধ নিয়ে আমাদের দুই দিনের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম হয়।

সেখানে আমরা সবাইকে এ রোগ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দিয়ে একটি সঠিক গাইড লাইন দিয়ে থাকি। যার ফলে আমাদের এখানে এসে অসংখ্যা রোগী সুস্থ হয়ে ভালোভাবে জীবন-যাপন করছে। হৃদরোগ নিরাময়ে আমাদের প্রয়োজন খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন। দশটি খাবার আমাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এগুলো হৃদরোগের মহা-শত্রু। খাবারগুলো হলো-

১.কলিজা, মগজ, হাড়ের মজ্জা: কোলেস্টেরল হৃদরোগের জন্য ক্ষতিকর। কলিজা, মগজ, হাড়ের মজ্জা- এই অংশগুলোতে বেশি পরিমাণ কোলেস্টেরল থাকে। তাই যারা হৃদরোগী তাদের কলিজা, মগজ বা নেহারি জাতীয় খাবার বর্জন করা উচিত।

২.চিংড়ি: হৃদরোগীদের জন্যে আরেকটি বর্জনীয় খাবার হলো চিংড়ি। দেখা গেছে, ক্যালরি এবং ফ্যাট কম থাকলেও চিংড়িতে আছে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল। সাড়ে তিন আউন্স ওজনের একপিস রান্না করা স্যামন মাছে যেখানে মাত্র ৬২ মি.গ্রা কোলেস্টেরল, সেখানে একই পরিমাণ চিংড়িমাছে পাওয়া গেছে ১৮৯ মিগ্রা কোলেস্টেরল। তাই হৃদরোগের ক্ষেত্রে চিংড়ি মাছ খাওয়া যাবে না।

৩.মাছের মাথা-ডিম: একই বিষয় প্রযোজ্য মাছের মাথা বা মাছের ডিমের ক্ষেত্রেও। রক্তের লিপিড প্রোফাইল বাড়িয়ে দেয় যে উপাদানগুলো, সেই এলডিএল বা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের উৎস এই খাবারগুলো। তাই এগুলো বর্জন করতে হবে।

৪.ফাস্টফুড: আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন জার্নালের একটি রিপোর্টে দেখা গেছে, প্রতি সপ্তাহে একবার নিয়মিতভাবে যারা ফাস্ট ফুড খায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাদের মারা যাওয়ার প্রবণতা অন্যদের চেয়ে ২০% বেশি। যারা একের বেশি অর্থাৎ দুই/তিন বার খায়, তাদের হার আরো বেশি- ৫০%। শুধু তা-ই নয়, সপ্তাহে যারা চার বা তার চেয়েও বেশি বার ফাস্ট ফুড খায়, তাদের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি ৮০% এরও বেশি।

৫.ডিমের কুসুম: হৃদরোগীদের জন্য ডিমের কুসুম খাওয়া ক্ষতিকর। ডিমের সাদা অংশ খাওয়া গেলেও হৃদরোগীদের জন্যে ডিমের কুসুমটা এড়িয়ে চলাই উত্তম। কারণ ডিমের কুসুমে আছে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল। দেখা গেছে, একটি বড় আকারের মুরগির ডিমে যে ১৮৬ মিলিগ্রাম পরিমাণ কোলেস্টেরল থাকে, তার পুরোটাই আছে কুসুমে। আর একজন হৃদরোগীর দিনে ২০০ মিগ্রা-র বেশি কোলেস্টেরল গ্রহণ করা উচিত নয়।

৬.ঘি-মাখন: ডালডা-প্রাচ্যের অভিজাত খাবারের তালিকায় ঘি-মাখন এক অনিবার্য অনুষঙ্গ হলেও এতে আছে উচ্চমাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট। সেইসাথে আছে পালমিটিক এসিড, যা আর্টারি ব্লকের কারণ হতে পারে- বলেছেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিজ্ঞানী ওয়াহিদা কর্মালি। এর বদলে অলিভ অয়েল, সান ফ্লাওয়ার অয়েল বা মার্জারিন ব্যবহার করা যেতে পারে।

৭.নারিকেল: হংকং আর সিঙ্গাপুরের দুটি পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে যত লোক হংকংয়ে মারা গেছে, তার অন্তত তিনগুণ বেশি মানুষ মারা গেছে সিঙ্গাপুরে। গবেষকদের মতে, এর একটি কারণ হলো, সিঙ্গাপুরের অধিবাসীদের খাবারে নারিকেল ও পাম তেল ব্যবহারের প্রবণতা। নারিকেল তেলের ৮৫ থেকে ৯০ ভাগই হলো স্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা হৃদরোগীদের জন্যে ক্ষতিকর।

৮.অতিরিক্ত ভাজা ও তৈলাক্ত খাবার: ডিপ ফ্রাই খাবার মুখরোচক তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু কি জানেন, খাবার যত ভাজা হয়, তার খাদ্যমান তত কমতে থাকে, তত তাতে যুক্ত হতে থাকে ক্ষতিকারক ফ্যাট? এমনও দেখা গেছে, একটা পর্যায়ে খাবারে আর কোনো ক্যালরিই অবশিষ্ট থাকে না।

যেমন, মাংস বা কোনো কিছু ভাজার সময় দেখবেন তেলের মধ্যে প্রচুর বুদবুদ উঠছে। এর কারণ হলো খাবারটার ভেতরে যে পানিটা আছে, তেলে ছেড়ে দেয়ার ফলে তা বেরিয়ে এসেছে এবং তেলের তাপ এবং চাপে তা শুকোতে শুরু করেছে।

ডিপ ফ্রাই হতে হতে পানি যখন পুরোপুরি শুকিয়ে যায়, বুদবুদ ওঠাও তখন বন্ধ হয়ে যায়। খাবারের ভেতরে পানির বদলে তখন ঢুকে যায় তেল। তো এমনিতেই মাংস বা এই জাতীয় খাবারগুলোতে আছে স্যাচারেটেড ফ্যাট, তার ওপর তেল যুক্ত হয়ে তার ফ্যাটের পরিমাণ বাড়ে আরো।

৯.রেড মিট: অতিমাত্রায় রেডমিট হৃদরোগের কারণ-এটা নতুন তথ্য নয়। তবে সেটা যে কেবল রেডমিটের ফ্যাট বা কোলেস্টেরলের কারণে তা কিন্তু নয়, সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, রেডমিট ভেঙে কারনিটাইন নামে একটি যৌগ দেহে তৈরি হয়, যা ট্রিমাথাইলেমাইন এন অক্সাইড নিঃসরণ করে। আর এথেরোসক্লেরোসিস বা আর্টারিতে ব্লক সৃষ্টিতে এই ট্রিমাথাইলেমাইনের একটা সক্রিয় ভূমিকা আছে।

১০.কেক, পেস্ট্রি, পুডিং, আইসক্রিম: এই প্রতিটি খাবারই চিনিযুক্ত। আর চিনি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়, এমনকি মানুষটি দেখতে মোটাসোটা না হলেও। জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশনের এই রিপোর্টটিতে বলা হয়, হৃদরোগের সাথে চিনির সম্পর্কটা ঠিক কোথায় তা বোঝা না গেলেও এটা দেখা গেছে যে, মিষ্টিজাতীয় পানীয় ব্লাড প্রেশারকে বাড়িয়ে দেয়। বাড়িয়ে দেয় লিভারের তৎপরতা, যা রক্তে ক্ষতিকর ফ্যাট নিঃসরণ করে। আর এ দুটো কারণই হৃদরোগের নেপথ্য অনুঘটক।

Check Also

শি’খে নিন ডাল রান্নার পারফেক্ট কৌশল

ডাল তো আপনারা সবাই বাসায় রান্না করেন। অনেকে আবার প্রতিদিনও বাসায় ডাল রান্না করে থাকেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *