ম’রণঘাতী করোনা ভাই’রাসের আক্রমনে তছনছ যখন গোটা পৃথিবী, মুখ থুবড়ে পড়ছে বিশ্ব অর্থনীতি, একে একে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই ছড়িয়ে পড়ছে করোনার মহামা’রী, তখন মহামা’রী রোধে কি ভাবে চলতে হবে সমস্ত মানব সম্প্রদায়কে , তা নিয়ে নির্দেশনা আসছে বিভিন্ন সংস্হা, প্রশাসন ও গবেষকদের কাছে থেকে। এবার প্রা’ণঘাতী করোনা ভাই’রাস প্রতিরোধে বিশ্ববাসীকে মহানবী হযরত মোহাম্ম’দ (সা.)-এর নির্দেশনা মানার আহ্বান জানিয়েছেন মা’র্কিন এক গবেষক।



যু’ক্তরাষ্ট্রের গবেষণা ও সংবাদভিত্তিক ম্যাগাজিন নিউজউইকের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। প্রতিবেদনটি লিখেন মা’র্কিন গবেষক ড. ক্রেইগ কন্সিডাইন। তিনি যু’ক্তরাষ্ট্রের টেক্সা’সে অবস্থিত রাইস ইউনিভা’র্সিটির একজন গবেষক। এছাড়া একজন আন্তর্জাতিক বক্তা।



প্রতিবেদনে বলা হয়, ইমিউনোলজিস্ট ডা. অ্যান্থনি ফসি এবং মেডিকেল রিপোর্টার ডা. সঞ্জয় গুপ্তের মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন, সংক্রামক রোগের বিস্তার রোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি সুন্দর ব্যবস্থাপনায় হোম কোয়ারেন্টাইন থাকতে।



একই সঙ্গে সুস্থ লোকদের জনসমাগম এড়িয়ে চলতে পরাম’র্শ দিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন, এসব উপায়ই হলো করোনা ভাই’রাস (কভিড-১৯) থেকে বেঁচে থাকার সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম।



মা’র্কিন গবেষক ড. ক্রেইগ কন্সিডাইন তার রিপোর্টে লিখেন, আপনারা কি জানেন মহামা’রির সময়ে সর্বপ্রথম কে এই সবচেয়ে ভালো কোয়ারেন্টাইনের উদ্ভাবন করেছেন?



আজ থেকে প্রায় ১৩শ বছর আগে ইস’লাম ধ’র্মের নবী হ’জরত মোহাম্মাদ (সা.) পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম কোয়ারেন্টাইনের ধারণা দেন। যদিও তার সময়ে সংক্রামণ রোগের মতো কোনো বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। তারপরেও তিনি এসব রোগব্যাধিতে তার অনুসারীদের যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা ছিল কভিড-১৯ এর মতো প্রা’ণঘাতী রোগ মোকাবেলায় দুর্দান্ত পরাম’র্শ। তার সেই পরাম’র্শ মানলেই করোনার মতো যেকোনো মহামা’রী থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।



এর উদাহ’রণ হিসেবে মা’র্কিন গবেষক মোহাম্মাদ (সা.)-এর একটি বাণী উল্লেখ করেন।



তিনি লিখেন- ’মোহাম্মাদ বলেছেন, যখন তুমি কোনো ভূখণ্ডে প্লেগ ছড়িয়ে পড়ার খবর শুনতে পাও তখন সেখানে প্রবেশ করো না। পক্ষান্তরে প্লেগ যদি তোমা’র অবস্থানস্থল পর্যন্ত পৌঁছে যায় তাহলে ওই জায়গা ত্যাগ কোরো না।’



তিনি আরও বলেছেন, ’যারা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছে তাদের থেকে সুস্থ মানুষকে দূরে থাকতে হবে।’



এভাবে বিভিন্ন সময়ে মানব জাতিকে সংক্রামণ থেকে রক্ষা করতে মোহাম্মাদ (সা.) রোগব্যাধিতে আক্রান্ত লোকদের পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারেও উদ্বুদ্ধ করতেন।



করোনা ভাই’রাস: মহানবীর নির্দেশনা মানার আহ্বান মা’র্কিন গবেষকের মা’র্কিন গবেষক ড. ক্রেইগ কন্সিডাইন এ ব্যাপারে নবীর অমূল্য বাণীগুলো হচ্ছে- ’পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈ’মানের অঙ্গ।’



’ঘুম থেকে ওঠার পরে হাত ধৌত করো। কেননা ঘুমের সময় তোমা’র হাত কোথায় স্প’র্শ করেছে তা তুমি জান না।’ ’খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধোয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে।’ ইত্যাদি। মা’র্কিন গবেষক ড. ক্রেইগ কন্সিডাইন তার প্রতিবেদনে আরো লিখেন, আর যদি কেউ অ’সুস্থ হয়ে পড়ে, তখন মোহাম্মাদ (সা.) তার অনুসারীদের সে বিষয়ে কী’ ধরণের পরাম’র্শ দিয়েছিলেন তা জানতে হবে।



সে সময় তিনি মানুষদের চিকিৎসা এবং ওষুধ খেতে উৎসাহিত করতেন। তিনি বলেছেন, ’আল্লাহ কোনো রোগ তার প্রতিকার না দিয়ে তৈরি করেননি।’ সবচেয়ে বড় কথা, মোহাম্মাদ (সা.) এটা বলেননি যে, শুধু তুমি প্রার্থনা করে বসে থাকবে। বরং তুমি প্রার্থনার পাশাপাশি চিকিৎসা নেবে। সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা পেতে মৌলিক নিয়মগু’লি মেনে চলবে।



এর উদাহ’রণ হিসেবে মোহাম্মাদ (সা.)-এর সময়ের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন মা’র্কিন গবেষক। তিনি তিরমিজি শরিফের বরাত দিয়ে লিখেন, ’একদিন, নবী এক বেদুইনকে লক্ষ্য করলেন যে, সে তার উটটি না বেঁধে চলে যাচ্ছে। তখন তিনি বেদুইনকে জিজ্ঞাসা করলেন, ’তুমি তোমা’র উটটি বেঁধে রাখছো না কেন?’



জবাব বেদুইন বললো, ’আমি আল্লাহ উপর ভরসা রেখেছি।’ তখন নবী বললেন, ’তোমা’র উটটি আগে বেঁধে রাখ, তারপর আল্লাহ উপর আস্থা রাখ।’ মোট’কথা, মোহাম্মাদ (সা.) ধ’র্মীয় ক্ষেত্রে যেমন অবদান রেখে অম’র হয়ে আছেন। ঠিক তেমনি মানুষের জীবনযাপন বিষয়ক মহামূল্যবান যে পরাম’র্শ তিনি দিয়ে গেছেন তা আজও অনুকরণীয়।